ভোটের দামামা নেই। এলাকার রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎ নিয়ে বেশি বরাদ্দের চাপ নেই এমপিদের কাছ থেকে। কিন্তু তাতে কি স্বস্তিতে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল?
অবশ্যই না। কারণ, বাজেটের সময় সব দেশের অর্থমন্ত্রীদের চাপে থাকতে হয়। আমাদের অর্থমন্ত্রী কেন ব্যতিক্রম হবেন?
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনেক দূরে এখনও। তাই ভোটের জন্য হয়তো কারো মন জয়ের চেষ্টা করতে হবে না অর্থমন্ত্রীকে। কিন্তু করোনা অতিমারি মোকাবিলায় অধিক ব্যয়ের চাপ তার ওপর। কিন্তু আয় বাড়ে নি।
ফলে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করে বিপর্যস্ত অর্থনীতিতে প্রাণ ফিরিয়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই হবে তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
এসব বিবেচনা মাথায় নিয়ে এক বছরেও বেশি সময় ধরে চলা নজিরবিহীন করোনা মহামারির বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে অনিশ্চিত আগামীর জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, যিনি আগের মেয়াদে পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে ৩ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ৫০তম বাজেট ঘোষণা করবেন মুস্তফা কামাল।
এমন এক সময় বাজেট দিতে যাচ্ছেন তিনি, যখন একদিকে প্রাণঘাতী করোনার অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করার কথা ভাবতে হচ্ছে, অন্যদিকে মাথায় রাখতে হচ্ছে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর চিন্তা।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, অর্থনীতিকে চাঙা করার জন্য কী জাদু আছে তার হাতে? এমন কী দাওয়াই দেবেন তিনি, যার মাধ্যমে কালো মেঘ কেটে নতুন আলো উদ্ভাসিত হবে? করোনামুক্ত হবে জনগণ? বাড়বে কর্মসংস্থান, প্রাণ ফিরে পাবে দেশের অর্থনীতি?
এক বছর আগে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এর অভিঘাতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ফলে ঘুরে দাঁড়ায় অর্থনীতি।
কিন্তু করোনার দ্ধিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে পরিস্থিতি এখন আরও খারাপ হয়েছে। নতুন করে আড়াই কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছে।
অনেকেই চাকরি হারিয়েছে। ছোট কলকারখানাগুলো বন্ধ প্রায়। আয় কমে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তসহ স্বল্প আয়ের অনেকেই কষ্টে আছেন। থমকে আছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।
এমন কঠিন সময়ে বৈরি পরিবেশের মধ্যে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে নতুন বাজেট ঘোষণা করবেন মুস্তফা কামাল। বর্তমান সরকারের আমলে এটি তার তৃতীয় বাজেট।
এর আগে সংসদ ভবনে সরকার প্রধানের কাছ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদেন করে নেবেন অর্থমন্ত্রী। বুধবার থেকে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে।
দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে রঙিন চশমা দিয়ে দেখলে হবে না। পঞ্চাশ বছরে দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশের যে সাফল্য ছিল, করোনায় সেটা অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে। ফলে প্রবৃদ্ধির দিকে না থাকিয়ে বাজেটে জীবন-জীবিকায় গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য বাজেটে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে পরিকল্পনা থাকা জরুরি। করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। গরিবের সুরক্ষায় গুরুত দিতে হবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আগে মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে। জীবন বাঁচলে পরে সবকিছু গুছিয়ে নেয়া যাবে।’
কী থাকছে বাজেটে
বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। স্বাস্থ্যে সর্বসাকল্যে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এর বাইরে করোনার টিকা কিনতে ১০ হাজার কোটি টাকার আলাদা থোক বরাদ্দ থাকছে।
নতুন কোনো করারোপ করা হচ্ছে না। বরং আওতা বাড়িয়ে কর আহরণ প্রক্রিয়া আরও সহজ করার পদক্ষেপ নিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী।
সামাজিক নিরাপত্তার আওতা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। নতুন করে আরও ১২ লাখ বয়স্ক-বিধবা ভাতা পাচ্ছেন। তবে ভাতার পরিমাণ অপরিবর্তীত থাকছে।
কৃষকের সুরক্ষায় এ খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হচ্ছে। ১০ টাকা দামে দুস্থ জনগণকে চাল খাওয়ানো ও সাশ্রয়ী দামে খোলা বাজারে চাল বিক্রি অব্যাহত রাখা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য, পাটসহ রপ্তানি খাত উজ্জীবিত রাখতে মোট ৪৯ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে। প্রবাসীদের সুরক্ষায় প্রণোদনা আরও ১ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে।
এ ছাড়া কর্মসংস্থান বাড়াতে ব্যবসায়ীদের খুশি করার জন্য কর প্রণোদনাসহ নানা পদক্ষেপের ঘোষণা আসছে।
নিজের তৃতীয় বাজেট প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিয়েই এবারের বাজেটের নাম দেয়া হয়েছে ‘জীবন ও জীবিকার বাজেট’।
প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে যেমন আগের চেহারায় ফিরিয়ে আনা হবে, তেমনি দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা প্রদানসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে জীবন বাঁচিয়ে জীবিকার সংস্থান করা হবে।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ে বিশাল ঘাটতি থাকবে। সে জন্য নতুন বাজেটে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে বেশি জোর দিতে হবে। ঘাটতি নিয়ে বেশি চিন্তা না করে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পরিকল্পনা থাকতে হবে।’
সাবেক অর্থসচিব ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, বাজেটের লক্ষ্য শুধু সরকারের আয় ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা নয়। এর লক্ষ্য হলো দেশের জনগণের জন্য গ্রহণযোগ্য একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘করোনায় মন্দা অর্থনীতি চাঙা করতে সরকারি ব্যয় আরও বাড়াতে হবে। গরীব মানুষের মাঝে অধিকতর নগদ ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া দরকার। আয়ের ক্ষেত্রে সরকার খুবই দুর্বল। ফলে আয় বাড়াতেই হবে। করোনা মোকাবিলায় একটি পূর্ণাঙ্গ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা জরুরি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য কম সুদে ঋণ ও কর ছাড়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
বাজেটের আকার
করোনা মোকাবিলায় অর্থনীতি চাঙা করতে অধিক ব্যয়ের জন্য একটি সম্প্রসারণমূলক বাজেট দেয়ার কথা বলেছেন দেশের বরেণ্য অর্থনীতিবিদরা।
যতদূর সম্ভব সেই পথেই হাঁটছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল।
অর্থবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন বাজেটের আকার হতে পারে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের চেয়ে প্রায় ১১ শতাংশ বেশি। প্রস্তাবিত বাজেট জিডিপির প্রায় সাড়ে ১৭ শতাংশ।
সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বেশি খরচের লক্ষ্য নিয়ে বিশাল একটি ঘাটতি বাজট (আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি) দিতে যাচ্ছেন মুস্তফা কামাল। এবার ঘাটতি ধরা হচ্ছে জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের (যে অর্থবছর শেষ হতে যাচ্ছে) মূল বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। আর ঘাটতি ছিল জিডিপির ৬ শতাংশ। পরে তা সংশোধন করে নির্ধারণ করা ৫ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বাজেটের আকার বড় ঘোষণা করা হলেও খরচ তার চেয়ে অনেক কম হয়। কারণ, আমাদের বাস্তবায়নের সক্ষমতা প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়েনি।
এতদিন সাধারণত জিডিপির ৫ শতাংশ ঘাটতি ধরে বাজেট করা হয়েছিল। কিন্তু করোনাকালীণ অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙা করতে দুটি বাজেটেই ঘাটতি ৬ শতাংশের বেশি ধরা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, মন্দা পরিস্থিতিতে ‘সম্প্রসারণমূলক’ বাজেট প্রণয়ন করাই হবে সরকারের জন্য উত্তম।
অর্থায়ন
বিশাল ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে বাজেটে অর্থায়ন করা হবে। অভ্যন্তরীণের মধ্যে আবার ব্যাংক ব্যবস্থা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ নেয়া হবে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ঋণ আসবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা।
এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেয়া হবে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। ৩২ হাজার কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ৫ হাজার ১ কোটি টাকা আসবে অন্যান্য খাত থেকে।
অপরদিকে, বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
সবমিলিয়ে দেশি এবং বিদেশি উৎসে থেকে মোট ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে নতুন বাজেটে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রস্তাব থাকছে। এসব ঋণের জন্য সরকারকে সুদ দিতে হবে মোট ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
রাজস্ব প্রাপ্তি
নতুন বাজেটে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি বা আয় প্রাক্কলন করা হচ্ছে মোট ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। এর বড় অংশই যোগান আসবে এনবিআর থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
অবশিষ্ট টাকা আসবে এনবিআর বহির্ভূত খাত এবং বৈদেশিক অনুদান থেকে। এর পরিমাণ ৬২ হাজার কোটি টাকা।
প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, নতুন বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে মূল বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ৮ দশমিক ২ শতাংশ। সরকার আশা করছে, চলতি অর্থবছরে এটি হতে পারে ৬ শতাংশের সামাণ্য বেশি, যদিও অর্থনীতিবিদ ও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ উন্নয়ন সহযোগীরা তা গ্রহণ করেন নি।
গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিস রায়হান মনে করেন, প্রবৃদ্ধির দিকে না থাকিয়ে বাজেটে জীবন-জীবিকাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
কর বিষয়ক যে সব সুবিধা থাকতে পারে
এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ,করোনাকালীন সংকট মোকাবিলায় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে একটি ব্যবসা-বান্ধব বাজেট উপহার দেবে সরকার।
নতুন কোনো করারোপ না করে করের আওতা বাড়ানো হচ্ছে। সহজ করা হচ্ছে আইন-কানুন।
বর্তমানে ১৩টি বিষয়ে টিআইএন বাধ্যতামূলক রয়েছে। নতুন বাজেটে আরও তিনটি খাতে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিম, বাড়ি বানানোর নকশা অনুমোদন ও সমবায় সমিতির নিবন্ধন করা।
কর্মসংস্থান বাড়াতে করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমছে। ১০ শতাংশ কর দিয়ে বিভিন্ন খাতে ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার বিদ্যমান সুযোগ আগামী বাজেটেও অব্যাহত রাখার প্রস্তাব থাকতে পারে।
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয় করে ছাড় দেয়া না হলেও ধনীদের ওপর সারচার্জ বাড়ছে। ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদশালীদের সারচার্জ ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে আইটি খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা আরও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির ২২টি খাত কর অব্যাহতি পাচ্ছে। নতুন করে আরও পাঁচটি খাতে এ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে: মোবাইল অ্যাপস ডেভলপমেন্ট, ই-লার্নিং প্লাটফর্ম, ই-বুক পাবলিংকেশন, ক্লাউড সার্ভিস সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন এবং ফ্রিল্যান্সিং।
দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় আমদানি বিকল্প নির্ভর শিল্প টেলিভিশন, ফ্রিজের উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর সুবিধা আগামী ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে।
এ ছাড়া কৃষি প্রক্রিয়াজাত ফল, দুগ্ধ উৎপাদন, গৃহস্থালি পণ্য যেমন রাইস কুকার, ওভেন, ব্লেন্ডার শিল্প স্থাপন করলে ১০ বছর কর অবকাশ সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া এসব পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি পাচ্ছে।
ঢাকার বাইরে নতুন করে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল-ক্লিনিক নির্মাণ করলে ১০ বছর কোনো কর দিতে হবে না।
শেয়ার বাজারের জন্য থাকছে সুখবর। এ খাতে কালো টাকা সাদা করার বর্তমান সুযোগ বহাল থাকতে পারে। শেয়ার বাজারে বর্তমানে তালিকাভূক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার ২৫ শতাংশ। এটি কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব থাকছে।
বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউজের শেয়ার লেনদেনের বিপরীতে উৎসে কর দশমিক ০৫ শতাংশ। এটি কমিয়ে দশমিক ০১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে। কমতে পারে ট্রেজারি বন্ডের কর।
মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটে পরিবর্তন আসছে। উৎপাদনমুখী শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের আগাম কর ৪ শতাংশের পরিবর্তে ১ শতাংশ কমছে। এ ছাড়া ভ্যাট ফাঁকির জরিমানা বর্তমানের দ্বি-গুণের পরিবর্তে এক-গুণ করা হচ্ছে এবং বিলম্বের জন্য জরিমানা ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে।
ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে ন্যূনতম কর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব থাকছে।
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ভালো খবর আসছে। তাদের উৎসাহিত করতে বার্ষিক লেনদেনের কর অব্যাহতি সীমা বর্তমানের ৫০ লাখ টাকার পরিবর্তে ৭০ লাখ টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যেমন: প্রতিবন্ধী, আদিবাসি, তৃতীয় লিঙ্গ, রূপান্তরিত নারী-পুরুষদের কোনো প্রতিষ্ঠান চাকরি দিলে ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য করপোরেট কর বর্তমানের চেয়ে ৫ শতাংশ ছাড়ের প্রস্তাব থাকছে নতুন বাজেটে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) সঙ্গে ৪০ কোটি ডলারের অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার।
‘ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম – সাবপ্রোগ্রাম ২’ বাস্তবায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতায় এই ঋণ বাজেট সহায়তা হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
গতকাল সোমবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ এবং এআইআইবির পক্ষে রজত মিশ্র চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। রজত মিশ্র এআইআইবির পাবলিক সেক্টর (রিজিয়ন ১) ও ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড ফান্ডস (গ্লোবাল) ক্লায়েন্টস বিভাগের অ্যাক্টিং চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার ও পরিচালক।
এই ৪০ কোটি ডলারের ঋণ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নীতিগত সংস্কার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যয় করা হবে।
অর্থ বিভাগ পরিচালিত এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য তিনটি: সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জলবায়ু অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে সহায়ক পরিবেশ তৈরি, অভিযোজনমূলক উদ্যোগ বাস্তবায়ন, এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা।
এ উদ্যোগ সরকারের জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়নে জলবায়ু সংবেদনশীলতা সংযোজনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি টেকসইতা এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সহনশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঋণের মেয়াদ ৩৫ বছর, যার মধ্যে প্রথম ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ড। এ ঋণ সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটভিত্তিক সুদ এবং একটি পরিবর্তনশীল স্প্রেডে নির্ধারিত, যেখানে ফ্রন্ট-এন্ড ফি ০.২৫ শতাংশ; যা এআইআইবির প্রচলিত শর্তানুসারে নির্ধারিত হয়েছে।
উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু সচেতন নীতিগত সংস্কারের পথ সুগম হবে।
চলতি (জুন) মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে ১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এসময়ে প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত মোট ২৯ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার।
এর আগেও প্রবাসী আয় প্রবাহে ইতিবাচক ধারা ছিল। সদ্যবিদায়ী মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তারও আগে গত মার্চে এসেছিল সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এরপর আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার এবং মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে।
আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ‘বেসরকারি’ খাতের জন্য সংকোচন নীতি নেওয়া হলেও সরকারের জন্য তা দেখছেন না বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ী নেতা ও বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
গতকাল শনিবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ‘বাজেট বিতর্ক: প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা মূল্যস্ফীতিকে দমন করার জন্য সুদের হার বাড়ায়া দিছি। ভালো কথা। আমরা সংকুচিত রাজস্ব নীতি করতে গিয়ে বাজেটের আকার ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দিছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কী, যে এটা বেসরকারি খাতের জন্য, বেসরকারি খাতের জন্যই শুধু সংকুচিত মুদ্রানীতি এবং সংকুচিত রাজস্ব নীতি।
‘যেই মাত্র এটা সরকারের জন্য, সরকারের জন্য আসে তখন আর এটা ওদের (সরকারের) জন্য সংকুচিত না।’
উদাহারণ দিয়ে মিন্টু বলেন, ‘গত দেড় বছরে বাংলাদেশে মোট ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যাংকে আমানত পাইছে। এর ভিতরে ২ লাখ ৭০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে সরকার। তো তাদের জন্য সংকুচিত রাজস্বনীতি তো আমি দেখতেছি না।’
এজন্য সরকারকে সকল দিক বিবেচনায় এনে ‘বিচার-বিশ্লেষণ’ করে নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন এ ব্যবসায়ী।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফে বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের কথা বলা হলেও বিএনপি নেতা মিন্টু মতে, তা দেখা যাচ্ছে না।
প্রস্তাবিত বাজেটেও অর্থনীতির চিহ্নিত সমস্যার সংস্কার দেখা না যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম, আরেক দিক থেকে মূল্যস্ফীতি বেশি। এই দুইটার সমন্বয়ের যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি আমাদের দেশে, সেটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কিছু সংস্কার করা যেত এই বাজেটে। কিন্তু সেটা আসলে আমি দেখি নাই।’
গত ২ জুন নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাজেটের আকার ছোট করলেও তা হয়েছে উন্নয়ন বাজেটে, যার দ্বারা সরাসরি উপকৃত হয় দেশের নাগরিক।
অপরদিকে অনুন্নয়ন বা পরিচালন ব্যয় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ২৮ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা।
বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন ব্যয় ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। আর সংশোধিত পরিচালন ব্যয়ের আকার দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা।
আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ২ শতাংশ।
অভ্যন্তরীণ অন্য উৎসের মধ্যে সরকার ব্যাংক খাত থেকে নিতে চায় ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এছাড়াও সঞ্চয়পত্রপত্র থেকে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার ২১ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
‘দুর্নীতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য’ দেখছেন উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আলোচনা সভার প্রধান অতিথি মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
‘অন্দরমহলের খবর দিতে চাই’- এ কথা বলে তিনি তার নয় মাসের উপদেষ্টা জীবনের তদবিরের গল্প তুলে ধরেন।
বলেন, ‘একটা জিনিসের ব্যাপারে আমি জাতীয় ঐক্যমত্য দেখতে পেয়েছি। সেটা হচ্ছে, দুর্নীতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য। সবাই দুর্নীতি করতে চান। কেউ কিন্তু বাদ নাই। রাজনীতিবিদ, আমলা, অধ্যাপক, কেউ বাদ নেই।’
উদাহরণ দিয়ে বলেন, আপনারা দেখবেন যে প্রথম আলোতে একটা সংবাদ এসেছে যে আমি যেগুলো দেখি (যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) তার মধ্যে একটা হচ্ছে সেতু বিভাগ। সেতু বিভাগের তারা করেছেন কী, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের পুনর্বাসনের জন্য কতগুলো ভবন করেছেন। তো ভবন করতে গিয়ে ওনারা আবিষ্কার করলেন যে কিছু জায়গা বেঁচে গেছে।
‘তো এখন কী করতে হবে? তো এটা সব সরকারি কর্মকর্তাদের দিতে হবে। অথচ সেতু বিভাগের ভবন বানানো কিংবা আবাসনের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়ই আছে। যেটাকে আমরা পূর্ত মন্ত্রণালয় বলে থাকি। …এখানে অকল্পনীয় ছিল যে ক্যাবিনেট সচিবরা পর্যন্ত অন্যায়-উপঢৌকন গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ অন্যায়-উপঢৌকন গ্রহণ করেছেন।’
তদবির প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই যে আমরা যে অফিসে আসি। আমার সঙ্গে এখন তো রাজনীতিবিদরাও দেখা করেন। কিন্তু কেউই কিন্তু চান না যে দুর্নীতির অবসান হোক। সবাই চান যে দুর্নীতি চলুক, তবে দুর্নীতিটা এবার আমাকে করার সুযোগ দিতে হবে।
‘সবাই বলেন, দেখেন ফ্যাসিস্ট আমলে জানেনই তো ব্যবসা করতে পারি নাই, এখন একটু খেয়াল রাখবেন। তো আমরা সে পথে যাচ্ছি না।’
এর বিপরীতে সরকারের চেষ্টা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যে অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা। যেই ব্যবসা পাবেন, প্রতিযোগিতা হবে সেখানে। আমরা সবকিছু উন্মুক্ত করে দিয়েছি।’
আসছে জুলাই-আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলেও উপদেষ্টা আশার কথা শোনান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির আহ্বায়ক মাহবুব উল্লাহ।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ২০২৪ সালে তাদের দেশের ব্যাংকগুলোর দায় ও সম্পদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের নামে পাওনা রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় ( প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে ) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ফ্রাঁ। এখনকার বিনিময় হার ধরলে যার পরিমাণ ৩৯৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ। ২০২২ সাল শেষে বাংলাদেশের কাছে সুইজারল্যান্ডের দায় ছিল ৫ কোটি ৮৪ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ৮৭৬ কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে দায়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, আমনাতকারীদের পাওনা এবং পুঁজিবাজারে বাংলাদেশের নামে বিনিয়োগের অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, যা বাণিজ্য কেন্দ্রিক অর্থ বলে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা অর্থের একটি অংশ পাচার করা সম্পদ হতে পারে বলে ধারণা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড বার্ষিক ব্যাংকিং পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ সুইজারল্যান্ডের এফআইইউর সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগও করেছিল। কিন্তু ব্যক্তির তালিকা সম্বলিত কোনো তথ্য তারা দেয়নি।
সুইজারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অবৈধভাবে কেউ অর্থ নিয়ে গেছে এমন প্রমাণ সরবরাহ করলে তারা তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের বদলে অন্য দেশের নামে অর্থ গচ্ছিত রাখে তাহলে তা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে থাকা পরিসংখ্যানের মধ্যে আসেনি। একইভাবে সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেক দেশের নাগরিকই মূল্যবান সামগ্রী সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে রেখে থাকেন।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের শ্রীলঙ্কায় তথ্য-প্রযুক্তি ও ওষুধ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপ-অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা।
গতকাল বৃহস্পতিবার কলম্বোয় শ্রীলঙ্কা সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই আহ্বান জানান তারা। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি দেশটির পররাষ্ট্র ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পৃথক দুটি বৈঠকে অংশ নেয়।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতারা শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপঅর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমার সঙ্গে কলম্বোতে তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে আরুন হেমাচন্দ্র বলেন, দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হলে আগামীতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করেছে এবং বাংলাদেশ সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে এলে সরকার পূর্ণ সহায়তা দেবে।
তিনি বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তার দেশের সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং এলক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানসমূহে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ জানান, ভূ-রাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ধারা পরিবর্তন হচ্ছে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, তবে প্রযুক্তি, পণ্যের মূল্য সংযোজন এবং উদ্ভাবনের দিক থেকে শ্রীলংকা বেশ এগিয়ে রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে দুদেশের বেসরকারিখাতের যৌথ উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ উভয় দেশের মধ্যে একটি এফটিএ স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যকার সংযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রীলংকার ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী এবং শ্রীলংকার উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলংঙ্কার অর্থনীতি প্রায় একই ধাঁচের যেখানে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) বাস্তবিক অর্থে ততটা কার্যকর হবে না। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ডিসিসিআই’র ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে শ্রীলংকার উপ-অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা বলেন, আমাদের একসাথে কাজ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা, ঔষধ, চা, জ্বালানি, আর্থিক সেবা ও পর্যটন খাত যৌথ বিনিয়োগের জন্য প্রচুর সম্ভাবনাময়।
তিনি জানান, শ্রীলংকা ইতোমধ্যেই একটি উচ্চাভিলাষী ডিজিটাল রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে এবং এই পরিকল্পনার অধীনে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রাষ্ট্রে রূপান্তর এবং প্রতিটি সেবা স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, শ্রীলংকায় অত্যাধুনিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাবৃন্দ এগিয়ে আসতে পারেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের শ্রীলংকার ঔষধ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। যাতে দেশটির স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী ও সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্য আরও কঠোর করার পর মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারবাজারে পতন ঘটে, যা যুদ্ধকে আরও সম্প্রসারণ করার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে, ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পঞ্চম দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ দাবি করেন এবং মার্কিন হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেন।
ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক ০.৭ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪২,২১৫.৮০ পয়েন্টে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ কমে ৫,৯৮২.৭২ পয়েন্টে এবং প্রযুক্তি খাতভিত্তিক ন্যাশডাক কম্পোজিট ০.৯ শতাংশ কমে ১৯,৫২১.০৯ পয়েন্টে নেমে আসে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষ এখন বিনিয়োগকারীদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। একই সময়ে তারা ফেডারেল রিজার্ভের দিকে নজর রাখছে। যা বর্তমানে দুই দিনের আর্থিক নীতিমালা বৈঠকে রয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ আপাতত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ, তারা ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছে।
গতকাল বুধবার ফেড তাদের সর্বশেষ অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রকাশ করবে, যাতে থাকবে প্রবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য।
এদিকে, বিনিয়োগকারীরা দুর্বল অর্থনৈতিক তথ্যের প্রভাবও মূল্যায়ন করছেন। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট খুচরা বিক্রি এপ্রিলের তুলনায় ০.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭১৫.৪ বিলিয়ন ডলারে। এই তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, এপ্রিলে শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কায় যে ভোক্তারা আগেভাগে পণ্য কিনে নিয়েছিলেন, মে মাসে সেই কেনাকাটার গতি কমে গেছে।
এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের ১১টি খাতের মধ্যে ১০টিতেই দরপতন হয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল জ্বালানি খাত, যা তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
প্রতিরক্ষা খাতভুক্ত কোম্পানিগুলোও লাভ করেছে। লকহিড মার্টিন ২.৬ শতাংশ এবং নর্থরপ গ্রুমান ১.২ শতাংশ বেড়েছে।
মন্তব্য